বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৯ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম: সিলেটের ঐতিহ্যবাহী নয়াসড়ক পয়েন্টের নাম পরিবর্তন করতে চান সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি চত্বরটিকে উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন, বৃটিশ বিরুধী আন্দোলনের অন্যতম সিপাহসালার ভারতের বিখ্যাত ইসলামী বিদ্যাপীঠ দারুল উলুম দেওবন্দের সাবেক সদরুল মুদাররিসীন আওলাদে রাসুল (সা) হযরত মাওলানা সৈয়দ হুসাইন আহমদ মাদানীর নামে ‘মাদানী চত্বর’ নামকরণ করতে চান।
উপমহাদেশের এই ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের সাথে নয়াসড়ক জামে মসজিদের অনেকদিনের স্মৃতি বিজড়িত। মূলত একারণেই তাঁর নামে পয়েন্টটি নামকরণ করছে সিসিক। ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে, নামকরণের লক্ষ্যে কাজ চলমান রয়েছে বলে জানাগেছে নগরভবন সূত্রে।
তিনি জানান-‘খুব শিগগিরই নয়াসড়ক পয়েন্টকে নতুন নামে তুলে ধরা হবে নগরবাসীর সামনে। তবে সেটি ঈদুল অাযহার পরে, আগে নয়। নয়াসড়ক পয়েন্ট প্রশস্থকরণ কাজ শেষ হয়েছে। পয়েন্টটি এখন আগের চেয়ে এখন অনেক বড় হয়েছে।’
গত রোববার জামিয়া দারুল উলুম সিলেট এর এক অনুষ্ঠানে সিসিক মেয়র অারিফুল হক চৌধুরী বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি নামকরণের স্বপক্ষে বলেন-‘ধর্মের প্রচার প্রসার এবং ইসলামের সাম্য সম্প্রীতির বিকাশে এ অঞ্চলের আলেম উলামা কার্যকর অবদান রেখে চলেছেন। এখানকার ইসলামী মূল্যবোধ বিকাশের ইতিহাসে উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন মাওলানা সৈয়দ হুসাইন আহমদ মাদানীর নাম এখনো ঘরে ঘরে।
সম্প্রতি নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে বাজেট বক্তৃতায় মেয়র আরিফ উল্লেখ করেন- ‘সিলেটের সঙ্গে ছিল তাঁর আত্মিক সম্পর্ক। সেই ১৯২২ সাল থেকে তিনি সিলেটের সঙ্গে সম্পর্কিত হন। প্রথম দিকে একটানা তিন বছর অবস্থান করেন। পরে ১৯৪৭ পূর্ববর্তী সময়ে প্রতিবছর রমজান মাসে সিলেট আসতেন। তাঁর কেন্দ্র ছিল ঐতিহাসিক নয়াসড়ক মসজিদ। আজও এই প্রখ্যাত বুজুর্গের স্মৃতি সিলেট নগরীতে সজীব রয়েছে। আমরা সকলের পবিত্র আবেগের প্রতি সম্মান পোষণ করি। তাই তাঁর স্মৃতি সংরক্ষণে নয়াসড়ক পয়েন্টকে ‘মাদানী চত্বর’ নামে চিহ্নিত করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এছাড়া সিলেটের ঐতিহ্যের স্মারক ও প্রাচীনতম নয়াসড়ক জামে মসজিদকেও নতুনরূপে সাজাতে চায় সিসিক। এ লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয়েছে একটি পৃথক পরিকল্পনা। সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকাসহ শহরতলির বিভিন্ন এলাকার মুসল্লিরা এখানে নামাজ পড়তে আসেন। কেননা মসজিদের পূর্বদিকে হযরত মানিক পীর (র.) সিটি গোরস্থান অবস্থিত। একারণে এখানে প্রায় প্রতি ওয়াক্ত নামাজের সময় মুসল্লীদের ভিড় থাকে। একারণে মসজিদটি বিশেষ গুরুত্ববাহী। বিগত রমজান মাসে নয়াসড়কে ৭ শতাধিক মুসল্লী একসাথে ইতিকাফে ছিলেন। তাদের সেবার জন্য নিয়োজিত ছিলেন নগরভবন কর্তৃপক্ষ ও মেয়র অারিফ।নয়াসড়ক মসজিদে আগত মুসল্লীদের অধিকতর সুবিধা প্রদান করতে, মুসল্লীদের নামাজের স্থান সংকুলানে এবং মসজিদ নতুন করে আরোও দৃষ্টিনন্দনভাবে নির্মাণ করতে আগ্রহী সিসিক। এতে সুমহান শান্তির ধর্ম ইসলাম চর্চার স্মৃতিবাহী আরেকটি স্থাপনা নগরীতে যুক্ত হবে বলে মনে করেন সিটি মেয়র। এদিকে নযাসড়ক পয়েন্টকে ”মাদানী চত্বর” ঘোষণার জন্য সিটি মেয়রসহ সংশ্ষ্টিদের প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন মাদানী কাফেলা বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা রুহুল আমীন নগরী ও সেক্রেটারী মাওলানা সালেহ আহমদ শাহবাগী। এক বিবৃতিতে তারা বলেন, সিলেটে ইসলাম প্রচারে মাওলানা মাদানী (র) এর অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ এই উদ্দোগটি নি: সন্ধেহে প্রশংসনীয়।তারা দ্রুত যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করে চত্বরটি উদ্বোধনের আহবান জানান।